শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৮ অপরাহ্ন

রাজশাহীতে ভোটার উপস্থিতি বড় চ্যালেঞ্জ

রাজশাহীতে ভোটার উপস্থিতি বড় চ্যালেঞ্জ

স্বদেশ ডেস্ক:

রাজশাহী সিটি নির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পড়বে- এ নিয়ে খোদ মেয়রপ্রার্থীরাই পড়েছেন অন্ধকারে। জাতীয় পার্টির প্রার্থীর ধারণা, ৩০ শতাংশের বেশি ভোটারকে কেন্দ্রে পাওয়া যাবে না। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বলছেন, ভোট পড়বে ৬০ শতাংশের ওপরে। যদিও নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গম্ভীরাসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সোমবার মধ্যরাত থেকেই শেষ হয়েছে প্রচার-প্রচারণা। এর আগে শেষদিনে ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় ও প্রচার-প্রচারণা সেরে নিয়েছেন প্রার্থীরা। সোমবার মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপিকে নানাভাবে অনুরোধ করা হলেও তারা বিভিন্ন শর্তজুড়ে দিয়ে নির্বাচনে আসেনি। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি এলে খুশি হতেন বলেও জানিয়েছেন নৌকার এই প্রার্থী।

সংবাদ সম্মেলনে আগামী বুধবার রাজশাহী সিটি নির্বাচনে তিনজন মেয়র প্রার্থী থাকলেও ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী হিসেবে খায়রুজ্জামান লিটন ফাঁকা মাঠে গোল দিতে যাচ্ছেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘খুশি হতাম যদি বিএনপিসহ অন্য দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করত। নানাভাবে তাদের অনুরোধ করা হলেও নানা রকম শর্ত জুড়ে দিয়েছে এবং ভোটে আসেনি। এখন তারা ভোটে না এলে তো কিছু করার নেই। যারা এসেছে, তাদের নিয়েই ভোট হচ্ছে।’

এ সময় রাজশাহী সিটি নির্বাচনে অন্তত ৬০ শতাংশ ভোট পড়ার আশা প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের এই মেয়র প্রার্থী। যদিও প্রচার শুরুর পর তিনি ৭০ শতাংশ ভোট পড়ার আশার কথা বলেছিলেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী এই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর এখন ভোটের আশা ৬০ শতাংশে নামিয়েছেন লিটন।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘এই নির্বাচনে তিন মেয়র প্রার্থী ছাড়াও ১১২ সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন। সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থী আছেন আরও ৪৬ জন। কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের নিজ নিজ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনবেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও ভোটার আনবেন। সব মিলিয়ে অন্তত ৬০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি আশা করছি।’ খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘এই নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে যে সাড়া আশা করেছিলাম, তার চেয়েও বেশি পেয়েছি। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। জনগণের মধ্যে আগ্রহের কমতি নেই।’

তবে সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ না থাকার অভিযোগ এনে জাতীয় পার্টির মেয়রপ্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেছেন, রেজাল্ট নিয়ে ভোটাররা নিশ্চিত হয়ে গেছেন আগেই। তাই ভোট নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ নেই। কারণ ভোটকেন্দ্রে ভোটারই পাওয়া যাবে না। ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পড়বে না। তবে জাকের পার্টির মেয়রপ্রার্থী লতিফ আনোয়ার ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ দেখছেন। তার আশা ৯০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি হবে।

কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, মেয়র প্রার্থী নিয়ে তেমন উত্তাপ না থাকলেও কাউন্সিলরদের প্রচার-প্রচারণার কারণে কোথাও কোথাও সহিংসতা, উত্তেজনা আবার কোথাও উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। গতকাল সকাল থেকেই তাই সরগরম হয়ে উঠে রাজশাহী। পাড়া-মহল্লায় বইছে প্রচার-প্রচারণার উত্তাল ঢেউ। এই আষাঢ়েও বইছে তাপপ্রবাহ। তবে তীব্র এই রোদ ও গরম উপেক্ষা করেই সোমবার সকাল থেকে চলে মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরদের গণসংযোগ দুপুর থেকে শুরু হয় শেষ দিনের মাইকিং ও প্রচার মিছিল। এরপর রাত পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারপত্র বিলির কাজ চলে জোরেশোরেই।

রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, মধ্য রাত থেকেই প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে কেন্দ্র কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ সরঞ্জাম পৌঁছানোর কাজ শুরু হবে।

তিনি আরও জানান, মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড এবং ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন ভোটার রয়েছেন। ভোটারদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার ৬ জন। মেয়র পদে ৪ জন, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১২৪ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৪৬ জন; অর্থাৎ ৩টি পদে সর্বমোট ১৭৪ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন।

আগামীকাল ২১ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মোট ১৫৫টি ভোটকেন্দ্রের এক হাজার ১৭৩টি কক্ষে ওইদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877